আরাকান আর্মির (এএ) হামলা থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ৩২৭ সেনা ও কর্মীকে আকাশ পথে তাদের দেশে ফেরানোর অনুমতি দেবে বাংলাদেশ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিলম্ব না করে তাদেরকে প্রত্যাবাসন করবে। এ নিয়ে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে তারা। খবর দ্য ইরাবতী।

বুধবার কক্সবাজারের কাছে টেকনাফের হায়কং সীমান্ত দিয়ে আরও ৬৩ সৈন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, যার ফলে বাংলাদেশে মোট সৈন্য, সীমান্তরক্ষী, পুলিশ ও অভিবাসন কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২৭ এ।

বাংলাদেশ সরকারের একজন প্রতিনিধি দ্য ইরাবতীকে বলেছেন, ঢাকায় মিয়ানমারের দূতাবাস কর্মীদের বাংলাদেশি ফেরিতে করে রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে পাঠানোর অনুরোধ করেছে। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ঢাকা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে, সরকার সৈন্যদের নেপিদোতে ফিরিয়ে আনতে পারে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বুধবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, সেনারা ফিরে আসার পর বিচারের মুখোমুখি হবে কিনা তা জান্তার অভ্যন্তরীণ বিষয়।

মঙ্গলবার আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মরাউক ইউ ও কিয়াউকতাউ শহরে জান্তা ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর দখল করার দাবি করেছে।

মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শহীদুল হক দ্য ইরাবতীকে বলেছেন, সেনারা যুদ্ধবন্দী নয় এবং মিয়ানমার দূতাবাসের উচিত তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা।

তিনি আরও বলেন, প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির মতো তৃতীয় পক্ষকে যুক্ত করতে পারে। বাংলাদেশি করদাতাদের অর্থ দিয়ে নৌপথে তাদের ফেরি করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটিকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে জান্তার পক্ষ নেওয়া হিসেবে দেখা হবে।

শহিদুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে বাংলাদেশের উচিত হবে না সংঘাতের পক্ষ হওয়া বা আরাকান আর্মিকে বিরক্ত করা।’

ঢাকার রেড ক্রস বুধবার দ্য ইরাবতীকে বলেছে, প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে এটি একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা হতে পারে যদি যোগাযোগ করা হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ তিন দিনের সফরে নয়াদিল্লিতে রয়েছেন, যেখানে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চলতি সপ্তায় ঢাকা সফর করেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতিসহ নিরাপত্তা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।