বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে রাজপথে পদযাত্রা করেছেন আইনজীবীরা। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে থেকে নবগঠিত সরকারবিরোধী আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের (ইউএলএফ) উদ্যোগে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা দেড়টার দিকে বিএনপি সমর্থক ও সরকারবিরোধী কয়েক শ’ আইনজীবীর অংশগ্রহণে পদযাত্রা শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট দিয়ে পদযাত্রা রাজ পথে প্রবেশ করে। এরপর শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারা, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান হয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান গেটের সামনে পদযাত্রা শেষ হয়। পদযাত্রায় কয়েক শ’ আইনজীবী অংশ নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ বেগম জিয়ার সাংবিধানিক অধিকার’, ‘দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’- এসব দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে আইনজীবীদের পদযাত্রা শুরু হয়।
ইউএলএফের কেন্দ্রীয় কনভেনার ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি, বার কাউন্সিলর সদস্য জয়নুল আবেদিনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের কো-কনভেনার মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউএলএফের কো কনভেনার সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, ইউএলএফের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক মহসিন রশিদ, ইউএলএফের অন্যতম নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, কে এম জাবির, সংগঠনটির সমন্বয়ক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সৈয়দ মামুন মাহবুব, ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক মহসিন মিয়া, সমন্বয়ক ওমর ফারুক ফারুকী প্রমুখ।
পদযাত্রায় অংশ নেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, আবেদ রাজা, মো: আক্তারুজ্জামান, মোর্শেদ আল মামুন লিটন, মো: কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মাহাবুব, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান আসাদ, সগীর হোসেন লিওন, রেজাউল করিম রেজা, শহিদুল ইসলাম শপু, মির্জা আল মাহমুদ, মাহাফুজুর রহমান মিলন, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, কে আর খান পাঠান, নাসরিন আক্তার, শামীমা সুলতানা দীপ্তি, মাহাফুজ বিন ইউসুফ, আয়েশা আক্তার, জহিরুল ইসলাম সুমন, মো: মাকসুদ উল্ল্যাহ, মাসুদ রানা, এ কে এম এহসানুর রহমান, জামিউল হক ফয়সাল প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, এই সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমাদের বিচার বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য স্বাধীন হতে পারেনি। আজ প্রধানমন্ত্রী বলছেন স্যাংশনের ভয়পান না। কিন্তু আমরা দেশের মানুষ লজ্জা পাই। তিনি বলেন, অনেক হয়েছে। এইদিন দিন না আরো দিন আছে। এইদিন নিয়ে যাবে আপনাদের পদত্যাগের কাছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, অক্টোবরের মধ্যে আপনাকে বিদায় নিতে হবে। আপনি যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
সুব্রত চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই দেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। দয়া করে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন; অন্যথায় আইনজীবী জনতা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
মহসিন রশিদ বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেয়া হলে আমরা জনতার সাথে আন্দোলন করে উনাকে মুক্ত করে আনব।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা কথা বলে তামাশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে আপনাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে। তিনি আরো বলেন, আইনের শাসন কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা ঘরে ফিরবে না, আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা রাজপথ ছেড়ে যাবে না।
সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়া। গণতন্ত্রের মুক্তি।