মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত বন্দী নেত্রী অং সান সু চি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে দেখার জন্য বাইরে থেকে চিকিৎসক আনার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির জান্তা সরকার। কারাগারের চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা চলছে ৭৮ বছর বয়সী এই নোবেলজয়ীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং সু চির প্রতি অনুগত ছায়া সরকার মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

জান্তা সরকারের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, সু চির মাড়ি ফুলে যাওয়া রোগে ভুগছেন। তিনি ভালোভাবে খেতে পারছিলেন না। বমি ও ‘মাথাশূন্য’ বোধ করছেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মুখপাত্রকে রয়টার্স থেকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে করা বিভিন্ন মামলায় এ পর্যন্ত মোট ১৯টি অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এসব অপরাধের দায়ে তার মোট ৩৩ বছরের কারাদণ্ড হয়।

গত মাসে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের একটি ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে দেশটির জান্তা সরকারের সাত হাজারের বেশি কারাবন্দিকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। এর আওতায় সু চিও পড়েছেন। তাকে পাঁচ মামলায় সাধারণ ক্ষমা করা হয়। ফলে তার কারাবাসের মেয়াদ ছয় বছর কমে ২৭ বছর হয়।

আগস্টে সু চিকে কারাগার থেকে রাজধানী নেইপিডোর একটি বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি এখন বন্দি আছেন।

শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কয়েক দশক ধরে আন্দোলন করেছেন। রাজনৈতিক জীবনের বেশির ভাগ সময়ই তাকে বিভিন্ন সেনা সরকারের অধীন বন্দিদশায় কাটাতে হয়েছে।

২০১৫ সালে মিয়ানমারে ৪৯ বছরের সেনাশাসনের অবসান হয়। এরপর ওই বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির নেতৃত্বাধীন দল নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল।

স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষণ গ্রুপের মতে, মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে ৩ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এদিকে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে যুদ্ধের কারণে ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।