গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বন্ধ কারখানা চালু ও বোনাস-ভাতা পরিশোধের দাবীতে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে। তাদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেছে। এসময় পুলিশের কয়েক সদস্য এবং শ্রমিক ও পথচারীসহ অন্ততঃ ১০/১২ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সর্টগানের গুলি ও টিয়ার সেল ছুড়েছে। শনিবার বিকেলে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরের নিশ্চিন্তপুরে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, গত ৩১ মে কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার এমএসএ টেক্সটাইল কারখানার এক শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে কারখানাটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিকরা ওই কারখানা চালু ও ঈদ বোনাসসহ পাওনা ভাতাদি পরিশোধের দাবী জানিয়ে আসছিল কর্তৃপক্ষের কাছে। তাদের দাবী মেনে না নেওয়ায় শনিবার দুপুরের পর আড়াইটার দিকে শ্রমিকরা কারখানা এলাকায় এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী সফিপুরের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে যানবাহন আটকা পড়ে মহাসড়কের উভয়দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেওয়ার একাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকলে পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়। এতে পুলিশ ও শ্রমিকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুলিশের কয়েক সদস্য ও শ্রমিক সহ অন্ততঃ ১০/১২ জন আহত হয়। ঈদের প্রাক্কালে বাজার এলাকার এঘটনায় আতংক ছড়িয়ে পড়লে লোকজন দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. কামরুল হাসান জানান, শ্রমিকরা ওই বন্ধ কারখানা চালু করা ও ঈদ বোনাসসহ তাদের পাওনা ভাতাদি পরিশোধের দাবীতে দুপুর আড়াইটা হতে হঠাৎ বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শ্রমিকদের দাবী দাওয়া নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। আলোচনা শেষ হতে না হতেই শ্রমিকরা বিকেল চারটার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় শ্রমিকরা পুলিশের গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে। পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালালে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সর্টগানের গুলি ও টিয়ার সেল ছুঁড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।