গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ অভিবাসী নৌকাডুবির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০ মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তান। কয়েক দিন আগে গ্রিসে ওই নৌকাডুবিতে কয়েকশ অভিবাসীর প্রাণহানির পর রোববার পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারীদের গ্রেপ্তার করেছে।

উন্নত জীবনের আশায় প্রত্যেক বছর হাজার হাজার পাকিস্তানি তরুণ অবৈধভাবে বিপজ্জনক পথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেন। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, গত বুধবার গ্রিসের পেলোপনিস উপদ্বীপের কাছে মরিচা ধরা একটি নৌকা ডুবে ৩০০ জনের মতো পাকিস্তানি মারা গেছেন।

পাকিস্তানের কর্মকর্তারা বলেছেন, রোববার পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৯ মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। আর অন্যজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দেশটির গুজরাট প্রদেশ থেকে। দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপগামী পাকিস্তানি অভিবাসীদের জন্য স্প্রিংবোর্ড হিসাবে কাজ করছে গুজরাট।

পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা চৌধুরী শওকত বলেছেন, ‘অভিবাসীদের ইউরোপে যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।’

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার যৌথ এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নৌকাটিতে ৪০০ থেকে ৭৫০ জন অভিবাসী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, শনিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গ্রিসে নৌকাডুবির ওই ঘটনায় ১২ পাকিস্তানিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নৌকাটিতে ঠিক কতজন পাকিস্তানি ছিলেন সেবিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনও তথ্য নেই।

একজন অভিবাসন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছেন, পাকিস্তানিদের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গ্রিসে নৌকাডুবে পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রাণহানির ঘটনায় সোমবার দেশে একদিনের জাতীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। একই সঙ্গে মানবপাচারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানবপাচারকারীদের ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়া হবে।

শেহবাজ শরিফের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মানবপাচারের মতো জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রচেষ্টা জোরদারের জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’