বাংলাদেশ টেষ্ট ক্রিকেট দল ৫ দিনের টেষ্ট ৫ দিনের শেষ অবদি টেনে নেবার ক্ষমতা এখনও অর্জন করতে পারেনি। ২০০০ থেকে ২০২২ অবদি টেষ্ট খেললেও সাড়ে ৩ দিন আর ৪ দিনেই বেশির ভাগ টেষ্ট হেরেছে বাংলাদেশ। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ৪র্থ দিনের সকালে মাঠে নামল আর হারের স্বাদ হজম করে মাঠ ছাড়লো টাইগাররা। ৭ উইকেটে হারের স্বাদ পেয়েছে অতিথি বাংলাদেশ। ১-০ ব্যবধানে সিরিজে পেছন থেকে শেষও ২য় টেষ্ট খেলতে ২৪ জুন মাঠে বাংলাদেশ।

২২ বছরে ১৩৩-টি টেষ্ট খেলার পরও ইনিংস হারের জুজু আমরা পেরুতে পারলাম কই! অ্যান্টিগুয়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের ১ম টেষ্টে কোন ক্রমে ইনিংস হারের লজ্জা থেকে রেহাই পেয়েছে বাংলাদেশ। ৩য় দিনটা কোনক্রমে পেরুলেও ৪র্থ দিনের সকালেই শেষ হলো ১ম টেষ্ট, মানে সোয়া তিন দিনেই টেষ্ট হেরেছে অতিথি বাংলাদেশ। ৩য় দিন ক্রিজে থাকা জন ক্যাম্পেল আর ব্লাকউড আজ সকালের ১ম সেশনের শুরু্তেই মারকুটে রুপ ধারণ করে কোন উইকেট না বিলিয়ে জয় পকেটে জমা করে। জন ক্যাম্পেল এর ফিফটি (৫৮) আর ব্লাকউড (২৬) রান।

একা সাকিবের কাধেই যেন সব দায়িত্ব! ১ম ইনিংসে ৫১ রানের পর এবার দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ৬৩ আর সঙ্গী নুরুল হাসান সোহান করেছেন ৬৪। স্কোর দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ২৪৫, লিড ৮৩। যা কি-না স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জন্য হাস্যকর টার্গেট। ৩ উইকেটের খরচেই স্বাগতিকরা ৮৮ রান স্কোর বোর্ডে জমা করে, ফলাফল ৭ উইকেটে জয়।

বাংলাদেশের লজ্জা জনক ব্যাটিং প্রদর্শনের কারণে ১০৩ রানে ১ম ইনিংস অলআউট। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬৫ রানে অলআউট হয়। এরপর আবারো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের লজ্জা জনক ভাবে আসা-যাওয়া দেখল বিশ্ব ক্রিকেট।

আগের ইনিংসে ২৯ রান করা ওপেনার তামিম ২য় ইনিংসে ২২ রানে আউট। এই টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষটায় মাহমুদুর হাসান জয় আর নাজমুল হোসেন শান্ত টিকে থেকে স্কোর ২ উইকেটে ৯৫ নিয়ে মাঠ ছাড়লেন। মাঝে নাইট ওয়াচ ম্যানের কাজ করতে এসে ব্যর্থ হলেন মিরাজ। মনে হয়েছিল আজ তৃতীয় দিনটা হয়তো ভাল কিছ করবেন জয়-শান্তর জুটি। সেটা প্রায় করে দেখাতে চেষ্টাও করলেন ৩য় জুটি।

কিন্তু ৩য় দিনে শান্ত নামের পাশে ১৭ রানের বেশি যোগ করতে পারলেন না। আর মমিনুল হক তো আবারো সেই ব্যথতার বৃত্তেই আটকে আছেন। মমিনুল ৪ আর লিটন কুমার দাস ১৭ রানে ফেরত গেলে স্কোর হয় ১০০ রানে ৫ উইকেট! বাংলাদেশ ৩য় দিনে লাঞ্চে যায় ৫ উইকেটে ১১৫ রানে। তখনও ৪২ রান করে ২২ গজি উইকেটে যুদ্ধ করছিলেন ওপেনার জয়। লাঞ্চের পর ৪২ রানেই দলকে অন্ধকারে ঢেলে দিয়ে আউট হলেন ওপেনার জয়। ৬ উইকেট পতনের পর শত ভাগ ইনিংস হারের ভয় পেয়ে বসে বাংলাদেশ শিবিরে।

উইকেটের তখন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর নুরুল হাসান সোহানের ৭ম জুটি। তখন তো অপেক্ষা ছিল ইনিংস ব্যবধানের হারের লজ্জাটা কখনও হজম করতে হবে! সেটা হতে দিলেন না অধিনায়ক সাকিব। নিজে লড়লেন আর সঙ্গী সোহানকে এগিয়ে যেতে ভরসা দিলেন। সাকিব ৪০ রানে ফিফটির পথে আর ২৬ রানে সোহান ব্যাট করছেন। লিড ছিল ১২ রানের।

এরপর ৩য় দিনের শেষটায় সাকিব ৬৩ রানে আর সোহান ৬৪ রানের জুটি শেষ হলে বাংলাদেশও শেষ হয় ২৪৫ রানে অলআউট। ৩য় দিনের শেষ বিকেলে ৮৩ রানের টার্গেটে জয় পেতে মাঠে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে সাঁজঘরের পথ দেখালেন পেসার খালেদ। তিন দিনে স্কোর ছিল ৪৯/৩।

আজ ৪র্থ দিনে জয়ের জন্য মাত্র ৩৫ রানের মিশনে মাঠে নামে স্বাগতিকরা। যা সংগ্রহ করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিক জন ক্যাম্পেল আর ব্লাকউডের। হেসে খেলেই স্কোর বোর্ডে আজ ৩৯ রান যোগ করে স্বাগতিকদের ৪র্থ জুটি, ৮৩ রানের মিশনে স্কোর বোর্ডে ৮৮/৩।