দুই দশক আগে আলোচিত আনসার বিদ্রোহের অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া ১ হাজার ৪৪৭ জনের মধ্যে যাদের বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা আছে, তাদেরকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।আর যাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে, তারা যতিদিন চাকরিতে ছিলেন, ততদিনের পেনশন সুবিধা তাদের দিতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে আগে জারি করা দুটি রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই রায় দেয়।আদালতে আনসার সদস্যদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাহাবুদ্দিন খান লার্জ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সূচীরা হোসাইন ও প্রতিকার চাকমা।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ২৮৯ জন আনসারের পক্ষে একই রায় দিয়েছিল হাই কোর্টের এই বেঞ্চ।ওই রায়ের পর ২৩ এপ্রিল পৃথক দুটি রিট আবেদন করেন বিদ্রোহের অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া চাকরিচ্যুত আনসাররা। একটি রিটে পক্ষভুক্ত হন ১ হাজার ৩৭৩ জন, আরেকটিতে ৭৪ জন। ওই দুটি রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ২৫ এপ্রিল রুল জারি করে। আনসার সদস্যদের চাকরিচ্যুতি কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে সোমবার রায় হল।রায়ের পর সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যারা পুনর্বহাল হবেন তারা চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে বেতন পাবেন। আর যাদের চাকরির বয়স নেই তারা যতদিন চাকরি করেছেন ততদিনের পেনশন পাবেন।১৯৯৪ সালে আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়, যা ৩০ নভেম্বর বিদ্রোহের রূপ নেয়।সেনাবাহিনী, বিডিআর ও পুলিশের সহযোগিতায় ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ওই ঘটনার পর কিছু আনসার সদস্য পালিয়ে যান।পরে মোট দুই হাজার ৬৯৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে কিছু কর্মকর্তা চাকরিতে পুনর্বহাল হন। দুই হাজার ৪৯৬ জন আনসার সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়।চাকরিচ্যুতদের বিরুদ্ধে মোট সাতটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। বিচারে যারা খালাস পান তারা চাকরি ফিরে পেতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করলেও সে সময় ফল হয়নি।