সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না হলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণতন্ত্র হত্যা দিবসের সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। শনিবার নয়াপল্টনে হলেও সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে এক যৌথ সভায় মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান। ৭ জানুয়ারি বিএনপি আহূত সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপি ওই যৌথ সভার আয়োজন করে।

বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। দিনটি উপলক্ষে শনিবার সোহরাওয়ার্দী সমাবেশ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। কিন্তু এখনো তারা সমাবেশের অনুমতি পায়নি।মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা আশা করেন কাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে সরকার সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান না হলেও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে হলেও বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা আশা করছেন সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সভা করার অনুমতি দেবে। গণতন্ত্রকে সংকুচিত না করে দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে।রকার বিএনপিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি বলেন, বিএনপি সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বিএনপি ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে গতকাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কালো পতাকা মিছিল বানচাল করা হয়েছে। একদিকে পুলিশ অন্যদিকে সরকারদলীয় বাহিনী দিয়ে কর্মসূচি বানচাল করেছে। আগেই আওয়ামী লীগ হুমকি দিয়েছিল বিএনপিকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না।মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রজন্ম লীগ নামের একটি সংগঠনের কিছু লোক এসে বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং একজন কর্মীকে মারধর করে। পুলিশের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছি, এখন পযর্ন্ত পাইনি। এখনও যদি অনুমতি দেন, কাল জনসভা সফল করবো। সেখানে না দিয়ে যদি পার্টি অফিসের সামনে দেন, তাহলেও আমরা জনসভা সফল করতে পারবো। আমরা দু’টো প্রস্তাব-ই রাখছি।আমরা আশা করছি আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আপনারা আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সভা করার অনুমতি দেবেন। এভাবে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করবেন না; এভাবে দরজা জানলা বন্ধ করে দেবেন না। দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। হাজারটা মত আসবে, পথ আসবে। সেখান থেকেই তো গণতন্ত্র বিকশিত হবে- বলেন বিএনপির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ৫ জানুয়ারি সভা করিনি। ওই দিন ‘দেশনেত্রীর’ মামলার হাজিরা ছিল। আমরা যে কোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে ৭ জানুয়ারি সভা করতে চেয়েছি। পিডব্লিউডি আমাদের অনুমতি দিয়েছে। পুলিশের অনুমতি পাইনি।আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে গণতন্ত্রের সব কিছুকে ক্লোজ করে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পল্টন ময়দানে মিটিং করতাম, সে পল্টন ময়দান বন্ধ। মুক্তাঙ্গনে প্রোগ্রাম করতাম, সেটাও বন্ধ। অর্থাৎ, তারা জনগণকে ভয় পায়। আমরা বিশ্বাস করি আমরা যদি সংগঠিত হই, কোনো বাধা আমাদের সামনে এসে দাঁড়াতে পারবে না। গণতন্ত্রের বিজয় হবে। প্রস্তুতি সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির সহ-সমাজ কল্যাণ বিষয় সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ইউনুস মৃধা প্রমুখ।