13-08-16-Addreses_14 Dal-3

কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তরা বলেছেন, জঙ্গীবাদ দমনে বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জাতির সঙ্গে উপহাস। যারা জঙ্গীবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে তারাই আবার জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। জঙ্গীবাদ লালনকারীদের সাথে কোন ধরনের ঐক্য হতে পারে না।শনিবার বিকেলে খামারবাড়িস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তরা এ সব কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, জাতীয় পার্টি (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গী সেজে মানুষ হত্যা করে বাংলাদেশটাকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে। তাই তাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কোন ঐক্য হতে পারে না। আমাদের জাতীয় ঐক্য ১৬ কোটি মানুষের সাথে হয়ে গেছে।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের দিক এগিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না।জঙ্গীবাদ দমনে বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জাতির সঙ্গে উপহাস উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের কমিটিতে রেখে এবং নিহত জঙ্গীদের পক্ষে সাফাই গেয়ে কখনো জাতীয় ঐক্য হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দেশে জঙ্গীবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর যখন দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় এনেছিলেন তখন তাকে হত্যা করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার যখন দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তখন জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বিএনপি জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের জবাবে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি জাতীয় ঐক্যের কথা বলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। যারা যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াতের সাথে জোট করতে পারে, তাদের সাথে আমাদের কোন দিন ঐক্য হতে পারে না।

বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কোন ঐক্য হবে না জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট নাশকতা ও জঙ্গিবাদের মদদদাতা।বেগম খালেদা জিয়া জঙ্গীবাদ সৃষ্টির মুল পরিকল্পনাকারী। তাই তাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবার কোন অধিকার থাকতে পারে না। তাদের সঙ্গে কোন ঐক্য হতে পারে না, হবেও না।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই অগ্রযাত্রা ও ব্যাপক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে খালেদা জিয়া দেশী-বিদেশী দালালদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তার এই ষড়যন্ত্র ১৪ দলের নেতাকর্মীরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করবেন।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের-ঋণ শোধ করে তার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের এখনই ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। আমরা এখন যুদ্ধের ভিতর দিয়ে আগ্রসর হচ্ছি, তাই আমাদের এখন ইতিহাস চর্চা না করে সামনের দিকে এগুতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে পরাজিত করতে হবে।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের খুনীরা জাতির অস্তিত্বকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। শুধু তাই নয়, তারা জাতির ওপর চার রকমের অভিশাপ চাপিয়ে দিয়েছিল। সামরিকতন্ত্র,মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ দেশের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। আর চার নম্বর অভিশাপ হচ্ছে বিএনপি’র রাজনীতি।