113651_1

দৈনিকবার্তা-ময়মনসিংহ, ৮ জুলাই: ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের বাসা ভাঙচুর করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগ ও ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের গ্র“পের সংঘর্ষের জের ধরে হল খালি করার নির্দেশের পর সকালেই হল ছেড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।এদিকে মধ্যরাতে মাইকিং করে খালি করার নির্দেশে বিপাকে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের ওই সংঘর্ষের কারণে বুধবার (০৮ জুলাই) সকাল ৮টার মধ্যে ছেলেদের এবং ১০টার মধ্যে মেয়েদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেহরির সময় মাইকিং করে বিষয়টি জানানো হয়।এদিকে ভোর হতেই ব্যাগ-লাগেজ হাতে একে একে হল ত্যাগ করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা। সে সময় বাসায় যাওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তির চিত্র ফুটে উঠে তাদের চোখ-মুখে। অনেককে বাস ও রেলের টিকেটের জন্য ময়মনসিংহ বাস ও রেল স্টেশনে প্রহর গুনতে দেখা যায়।

বিপাকে পড়া শিক্ষার্থীরা জানায়, হল খোলা থাকবে চিন্তা করে শুক্রবার ও শনিবারে বাসায় যাওয়ার জন্য টিকেট করেছে অনেকেই। কিন্তু এখন হঠাৎ বাধ্যতামূলক হল ছাড়ার বিষয়টা অনেকটাই অনাকাঙ্খিত।প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, বন্ধ শেষে ২৬ জুলাই (রোববার) যথারীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও জরুরি সেবাগুলো- হেল্থ কেয়ার সেন্টার, বিদ্যুত, গ্যাস, পানি সরবরাহ, প্রিভেনটিভ শাখা, নিরাপত্তা শাখা ন্যূনতম কর্মচারী দিয়ে চালু থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, সেহরির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোস্টদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবু ও জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় জসিম গ্রুপের নেতাকর্মীরা।

ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে আটকে রেখে মারধর করে। পরবর্তীতে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বাবু ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল গ্র“পের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে জসিম গ্রুপের নেতাকর্মীদের পাল্টাধাওয়া করে। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেওয়াটখালি এলাকায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৬ জন আহত হয়।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রাতে বেশ কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কেওয়াটখালী এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের বাসা এবং আশেপাশের দোকান পাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

পরে স্থানীয় জনগণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাইফুলসহ ৪/৫ জন নেতাকে পিটিয়ে আহত করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর জাকির হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের সংঘর্ষের কারণে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিরাপদে হল ত্যাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।